অনেক আগে থেকে, সেই ২০০৪ সাল থেকে কম্পিউটারের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় পরিচিতজনদের অফিস, ব্যাবসায়িক এবং ব্যাক্তিগত কম্পিউটার এর বিভিন্ন সমস্যা সারাতে অনেক ছোটা ছুটি করতে হয়েছে। অনেক কল রিসিভ করতে হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে কমন এবং বেশি পরিমান যে সমস্যার জন্য সময় দিতে হয়েছে এবং কল রিসিভ করতে হয়েছে সেটি উইন্ডোজ ওপেন না হওয়া বা উইন্ডোজ রি-ইন্সটল করা। অনেককে মোবাইল ফোনে কথা বলে অনেক সময় ধরে ধারাবাহিক ভাবে নির্দেশনা দিয়ে উইন্ডোজ ইন্সটল এর ব্যাপারে সাহায্য করতে হয়েছে। অনেক দেরিতে হলেও, ভাবলাম এটি নিয়ে লিখি।
দুনিয়া জুড়ে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার হয় উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম। এটির ফ্রিতেও ইন্সটল/ব্যাবহার করা যায় জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রীয় হয়ে উঠেছে ব্যাবহারকারীদের কাছে। ইউরোপ আমেরিকার দেশ গুলোতে এপেল এর ম্যাক বা অন্য লিনাক্স বেজড অপারেটিং সিস্টেম গুলো বহুল ব্যাবহার হলেও সেখানেও উইন্ডোজই বেশি জনপ্রীয়। আমাদের এশিয়াতে তো উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একক রাজত্বই বলা চলে। আবার, এই উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে ফাইল-মিসিং এর কারনে ত্রুটিরও শেষ নেই। আগেকার দিনে যদিও সমস্যা টা খুব বেশি হত। প্রতিদিন কয়েক দফা ইলেক্ট্রিসিটি ড্রপ করার কারনে এবং বেশিরভাগ লোকজনই ভোল্টেজ স্টাবিলাইজার বা পাওয়ার ব্যাকাপ ব্যাবহার না করার কারনে, হুট করে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফাইল-মিসিং জনিত সমস্যায় উইন্ডোজ ত্রুটি করতো বেশি। এখন ইলেক্ট্রিসিটি আগের তুলনায় ভালো, আবার কম্পিয়টার মাদারবোর্ড এবং পাওয়ার সাপ্লাই গুলোও অধিক লোড নিতে সক্ষম হওয়ায় আগের মত একটুতেই উইন্ডোজ সমস্যা কমে গেছে।
কিভাবে পেন-ড্রাইভ বুটেবল করতে পারি
আশার কথা হচ্ছে, উইন্ডোজ সেভেন(৭) এর দু-একটি সংস্করন এর পর থেকেই মাইক্রোসফট পেন-ড্রাইভ দিয়ে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম রি-ইন্সটল এবং ডিভিডি তে রাইট করার জন্য ছোট একটি টুল রিলিজ করেছিলো। যেটি এখনো হালনাগাদ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে বুটেবল করতে ভালো কাজ করে। খুবই ছোট সাইজের এবং সহজেই ব্যাবহার করা যায় এই টুল টি। পেন-ড্রাইভ বুটেবল করার এটা একটি খুবই সহজ মাধ্যম।
তাছাড়া, পেন ড্রাইভ কে বুটেবল করতে কমান্ড(সিএমডি) এর ব্যাবহার করা যায়। দু ক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর ভার্সন টি লোকাল ড্রাইভে ডাউনলোড করা থাকতে হবে।
তো চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে আমরা মাইক্রোসফট বুট টুল ব্যাবহার করে এবং কমান্ড ব্যাবহার করে একটি পেন-ড্রাইভকে বুটেবল করতে পারি এবং পরবর্তীতে সেটি ব্যাবহার করে উইন্ডোজ ইন্সটল/রি-ইন্সটল করতে পারি।
একটি পেন-ড্রাইভ বুটেবল করতে যা যা লাগবে
পেন-ড্রাইভ বুটেবল করতে একটি ১৬ জিবি বা অধিক ধারন ক্ষমতার একটি সচল পেন-ড্রাইভ লাগবে, কাঙ্ক্ষিত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর ফাইল লাগবে, এক্ষেত্রে কমান্ড দিয়ে বুটেবল করতে সিডি/ডিভিডি থেকে কপি করা ফাইল হলেও চলবে। কিন্তু মাইক্রোসফট এর টুল টি ব্যাবহার করে বুটেবল করতে উইন্ডোজ এর .ISO ফরমেট এর ফাইল লাগবে। .ISO ফাইল মাইক্রোসফট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেই পেয়ে যাবেন। তাছাড়া প্রি-এক্টিভেটেড ভার্সন গুগল করলে অনেক গুলো ওয়েবসাইটেও পেয়ে যাবেন অনায়াসে। যদি বুটেবল ফাইল পেতে কারো বেগ হয় তাহলে এখানে কমেন্ট করলে আমি ডিরেক্ট ডাউনলোড লিংক দেয়ার চেষ্টা করবো।
তারপর একটি সচল কম্পিউটার লাগবে, যদি আপনার কম্পিউটার টি সচল না থাকে তাহলে বুটেবল করতে অন্য পিসির হেল্প নিতে হবে। আপনার পিসি/ল্যাপটপ অন হওয়ার সময় “Select Boot Device” এর শর্টকাট টি জানা থাকতে হবে। এবং কোন ড্রাইভে আপনি উইন্ডোজ দিতে চাচ্চেন সেটি চেনা থাকতে হবে। সাধারণত আমরা সি ড্রাইভে উইন্ডোজ ইন্সটল করে থাকি।
উইন্ডোজ বুটেবল টুল দিয়ে পেন-ড্রাইভ বুটেবল করার নিয়ম
প্রথমে মাত্র ৩ মেগাবাইটের কিছু কম সাইজের মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বুটেবল টুল টি নিচের ঠিকানা হতে ডাউনলোড করে নিন।
ডাউইনলোড শেষ হলে সেটাপ ফাইলটিতে (.exe ফাইলটি) ডাবল ক্লিক করে অন্য সব সফটওয়ার এর মত ইন্সটল করে ফেলুন। এবার আপনার সচল এবং ফাকা(ইম্পটি) পেন-ড্রাইভটি কম্পিউটারে লাগিয়ে নিন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, বুটেবল করতে যাওয়া পেন-ড্রাইভটি ফরমেট হয়ে যাবে। সুতরাং, যিদি পেন ড্রাইভের ভিতর কোন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আগে থেকেই থেকে থাকে তবে তা ব্যাকআপ করে নিন বা অন্যত্র সরিয়ে নিন।সফটওয়ারটি ইন্সটল হয়ার পর ওপেন করতে গেলে একটি ব্লাইন্ড পপ-আপ স্ক্রিনে আপনার সম্মতি চাইবে সেখানে “Yes” করুন। তারপর টুলটি ওপেন হলে নিচের মত উইন্ডো দেখতে পাবেন।
Source file: অংশে আপনাকে উইন্ডোজ এর ডাউনলোড করা .ISO ফাইলটি দেখিয়ে দিতে হবে। পাশের “Browse” বাটনে ক্লিক করে আপনার লোকাল ড্রাইভের যেখানে .ISO ফাইলটি রাখা আছে সেখান থেকে সিলেক্ট করে দিতে হবে। উপরের ফটো তে আমি উইন্ডোজ ১০ এর একটি .ISO ফাইল সিলেক্ট করেছি। .ISO ফাইলটি সিলেক্ট করে নেক্সট করলে ২য় ধাপে নিচের মত একটি স্ক্রিন আসবে।
এখানে যেহেতু আমরা পেন ড্রাইভ বুটেবল করতে যাচ্ছি, উপরে আসা স্ক্রিন থেকে “USB Device” অপশনটি আমাদেরকে সিলেক্ট করতে হবে। “USB Device” এ ক্লিক করলে ৩য় ধাপে নিচের মত স্ক্রিন আসবে।
এখানে ভালো করে খেয়াল করুন আপনার পেন-ড্রাইভটি সিলেক্টেড দেখাচ্ছে কিনা। যদি না দেখতে পান তাহলে ডিভাইস নেম এর পরে v চিহ্নতে ক্লিক করে ডিভাস নেম চেক করুন। অথবা, v এর ডান পাশে রিফ্রেশ আইকনে ক্লিক করুন। তবুও না দেখতে পেলে পেন-ড্রাইভ এর কানেকশন পুনরায় চেক করুন। রিকানেক্ট করে নিচের “Start over” এ ক্লিক করে আবার ১ম ধাপ থেকে আসুন। উপরের স্ক্রিনশটে আমার নিজের ৩২ গিবি পেন ড্রাইভ সংযোগ দেয়া আছে এবং সিলেক্ট করা দেখাচ্ছে। আপনার পেন-ড্রাইভ টির কানেকশন নিশ্চিত হলে “Begin Copying” এ ক্লিক করতে হবে। তারপর নিচের মত স্ক্রিন আসবে।
এক্ষেত্রে পেন-ড্রাইভ টি ফরমেট সম্মন্ধীয় একটি পপ-আপ আসবে যেখানে আপনাকে জিগ্যেস করা হবে সংযোগ দেয়া পেন-ড্রাইভ টি ফরমেট হয়ে যাবে, আপনি সম্মত কি না, যেহেতু আগেই বলেছি এই ব্যাপারে, এবং পেন-ড্রাইভে ডাটা থাকলে সরিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তো ধরে নিচ্ছি পেন-ড্রাইভে আপাতত তেমন কিছু নেই। এবার, “Erase USB Device” এ ক্লিক করলে আরো একটি সতর্কীকরণ পপ-আপ আসবে, সেখানেও “Yes” করুন। এবার দেখবেন সর্বশেষ ধাপ চলে এসেছে এবং আপনার বুটেবল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একটি প্রগ্রেস বার আসবে এবং সেখানে ডান পাশে পারসেন্টেজ দেখতে পাবেন। ১০০% হয়ে গেলে এবং নিচে নিশ্চিতকরণ বার্তা পেলে বুঝবেন পেন-ড্রাইভটি বুটেবল হয়ে গেছে।
এবার জানবো কমান্ড দিয়ে কিভাবে একটা পেন-ড্রাইভ বুটেবল করা যায়। এবং সব শেষে পেন-ড্রাইভটি ব্যাবহার করে উইন্ডোজ দেয়ার কিছু দরকারি নির্দেশনা এবং টিপস পাবেন।
কমান্ড দিয়ে যেভাবে পেন-ড্রাইভ বুটেবল করবেন
কমান্ড উইন্ডোজের একটি ডিফল্ট ফিচার। আমরা ক্লিক করে যে কাজগুলো করি, এগুলোর উইন্ডোজ কোর ফিচার/ফাংশন গুলোর প্রায় সবগুলোই এই কমান্ড ব্যাবহার করে করা যায়। যেমন, কোন ফাইল কপি, রিমুভ/ডিলিট, রিনেম, আরো অনেক কিছু। তাছাড়া এই কমান্ড ব্যাবহার করে এমনও কিছু কাজ করা যায় যেসব গ্রাফিক্যালি করা যায়না। তো এই কমান্ড এর সুবিধা ব্যাবহার করে আমরা একটি পেন-ড্রাইভ কি করে বুটেবল করতে হয় সেটা নিচে আলোচনা করবো।
কমান্ড ব্যাবহার শুরুর পূর্বে একটি ফাকা অন্তত ১৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার একটি পেন-ড্রাইভ কম্পিউটারে লাগিয়ে নিবেন। এবং এক্ষেত্রে উইন্ডোজ এর .ISO ফরমেট এর ফাইল এর পরিবর্তে আমাদের লাগবে ডিস্ক থেকে কপি করা ফাইল বা এক্সট্রাক্ট করা নরমাল ফাইল। যেখানে .ISO এর মত শুধু মাত্র একটি ফাইল এর পরিবর্তে কয়েকটি ফোল্ডার এবং কিছু ফাইল থাকবে। যদি আপনার কাছে এরকম ফাইল না থাকে এবং শুধু মাত্র .ISO ফাইলটি থাকে তাহলে .ISO ফাইলটি এক্সট্রাক্ট করলেও আমরা স্বাভাবিক একটি উইন্ডোজ ডিস্ক এর ভিতরে থাকা ফাইল এর মত ফাইল পাবো। .ISO ফাইলটি এক্সট্রাক্ট করতে আপনি উইন্ডোজ এর ডিফল্ট ফিচার এর পাশাপাশি WinRAR বা 7zip টুল গুলোর যে কোন একটু ব্যাবহার করতে পারেন। .ISO ফাইলটির উপর রাইট ক্লিক করলে “Extract here” এ ক্লিক করলেও কাজ হবে।
উইন্ডোজ ফাইলগুলোর জন্য আপনি গুগলে সার্চ করলেও অনেক সোর্স পেয়ে যাবেন।
এবার কিবোর্ডে স্টার্ট বাটন চেপে বা ডেস্কটপের টাস্ক বারের সব বামে স্টার্ট আইকনে ক্লিক করে কিবোর্ডে “cmd” লিখলে কমান্ড এপ টি আসবে। সেটার উপর রাইট ক্লিক করে “Run as administrator” এ ক্লিক করে ওপেন করতে হবে। একটি পপ-আপ আসবে, সেখানে “Yes” করলে কালো স্ক্রিন এর কমান্ড এপ ওপেন হবে। নিচের স্ক্রিনশট টি দেখলে আশা করি বুঝতে পারবেন পুরো বিষয়টি।
আপনাকে মোট ৮ টি কমান্ড/ধাপ ফলো করতে হবে। নিচে একটি গাইড-ফটো দেয়া আছে যেটি দেখে নিচের বর্ণনার সাথে মিলালে আরো ভালো ধারনা পাবেন।
কালো স্ক্রিন এর কমান্ড এপটি ওপেন হলে প্রথমে লিখতে হবে “diskpart” এবং কিবোর্ডে এন্টার চাপতে হবে। নিচের রেফারেন্স ইমেজে মার্ক করা Command 1 টি এই ধাপটি নির্দেশ করে। বলে রাখি, ডিস্কপার্ট কমান্ডের একটি কোর ফিচার। যেখানে প্রবেশের পর কমান্ড এপ’টি ডিস্কপার্ট সম্বন্ধীয় কাজ গুলো ভালো পারফর্ম করবে।
এর পর লিখতে হবে “list disk” এবং এন্টার চাপতে হবে। এটি Command 2 ধাপ। এরপর কম্পিউটারে সংযোগ দেয়া হার্ড ডিস্ক এবং পেন-ড্রাইভ বা যে কোন স্টোরেজ ডিভাইস এর একটি লিষ্ট শো করবে। সেখান থেকে আপনি যে পেন-ড্রাইভ টি বুটেবল করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। এখানে একটু বেশি সাবধানে কাজটি করতে হবে, আপনি ভুলে অন্য কোন ড্রাইভ সিলেক্ট করে আগালে সেটি ফরমেট হয়ে যাবে এবং ডাটা লস হয়ে যাবে।
ড্রাইভ লিষ্টে দেখুন আপনার পেন-ড্রাইভ এর সাইজ অনুযায়ী কোন টা হতে পারে, সাধারণত Disk 0 টি আপনার হার্ড ডিস্ক এবং Disk 1 টি আপনার পেন-ড্রাইভ। নিশ্চিত হতে ডান পাশে ড্রাইভ এর সাইজ দেখুন। যেটির সাইজ কম এবং পেন-ড্রাইভ এর সাইজ এর সমপরিমান দেখাচ্ছে সেটিই হবে আপনার পেন-ড্রাইভ। আমরা ধরে নিচ্ছি এক্ষেত্রে Disk 1 আপনার পেন-ড্রাইভ।
এরপর আপনার পেন-ড্রাইভ টি, মানে Disk 1 টি সিলেক্ট করতে কমান্ড স্ক্রিনে লিখুন “select disk 1“। নিচে ডিস্ক ১ সিলেক্ট হয়েছে এমন একটি নিশ্চিত বার্তা আসবে। এই অংশটি নিচের স্ক্রিনশট গাইডটিতে Command 3 অংশে দেখতে পারবেন।
উপরে আলোচনা কৃত কমান্ড গুলো এবং পরবর্তী কমান্ড গুলোর ইমেজ-গাইড টি নিচে দেয়া হলো, ভালো করে খেয়াল করুন এবং নিচের বর্ণনা গুলো পড়তে থাকুন।
আশা করছি উপরের ইমেজ টি নির্দেশনা বুঝতে আপনাকে সহযোগীতা করেছে। এবং ধরে নিচ্ছি আপনি ইতোমধ্যেই “select disk 1” ব্যাবহার করে Disk 1 সিলেক্ট করেছেন।
তাহলে এবার Command 4 এর দিকে খেয়াল করলে দেখবেন “clean” কমান্ড ব্যাবহার করা হয়েছে। তো এবার আপনি কমান্ড স্ক্রিনে “clean” লিখে এন্টার দিতে পারেন।
ক্লিন সাক্সেস হয়ে গেলে এবার পেন-ড্রাইভ টি পার্টিশন করে নিতে কমান্ড লাইনে লিখুন “create partition primary“. ইমেজ নির্দেশনায় Command 5 এ এটি দেখিয়ে দেয়া আছে।
পার্টিশন হয়ে গেলে আর একটি কমান্ড লাইন এর দ্বারা এবার পেন-ড্রাইভ টি ফরমেট করতে হবে। পেন-ড্রাইভ ফরমেট করতে কমান্ড লাইনে “format fs ntfs=quick” লিখে এন্টার চাপুন। ১%-১০০% দ্রুতই হয়ে যাবে। এবং সাকসেসফুল মেসেজ দেখাবে। উপরের ইমেজে এটি Command 6 নির্দেশ করা আছে।
এবার আরো ছোট দুটি কমান্ড এর মাধ্যমে আমরা কমান্ড এর কাজ শেষ করবো।
এবার কমান্ড স্ক্রিনে লিখুন “active” এবং কিবোর্ডে এন্টার দিন। একটিভ হয়ে গেলে এবার আমরা কমান্ড থেকে বের হতে কমান্ড স্ক্রিনে “exit” লিখে এন্টার দিলে কমান্ড এপটি প্রথমে ডিস্কপার্ট থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক কমান্ড স্ক্রিনে চলে আসবে, এখান থেকে উপরে ক্লোজ বাটনে ক্লিক করে বা আবার “exit“লিখে কমান্ড দিলে এটি ক্লোজ হয়ে যাবে।
এবার আপনার কাছে থাকা উইন্ডোজ এর স্বাভাবিক বুটেবল ফাইলগুলো যে ফোল্ডারে আছে সেখানে ঢুকে কিবোর্ড এর “Ctrl+A” চেপে সব ফাইল কপি করে করে পেন-ড্রাইভে পেষ্ট করে দিন। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন আপনি যেন ফাইলগুলো কপি করার সময় অবশ্যই কিবোর্ড এর “Ctrl+A” চেপে কপি করেন। মাউস দিয়ে সব ফাইল সিলেক্ট করলে কাজ হবেনা। কারন ওই ফোল্ডারে হিডেন অনেক ফাইল থাকে যেটি মাউস দিয়ে সিলেক্ট করলে সমস্ত ফাইল আসলে সিলেক্ট এবং সেই সাথে পেন-ড্রাইভে কপিও হবেনা।
কপি শেষ হলে পেন ড্রাইভ টি বুট করার জন্য রেডি হয়ে যাবে।
পেন ড্রাইভ দিয়ে উইন্ডোজ ইন্সটল করতে কিছু টিপস
নিচের টিপস গুলো সাধারণত কেউই আপনাকে দিবেনা। অবশ্যই ইচ্ছে করে না, তারা এগুলো দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনা। কিন্তু একটু সাবধান থাকলে যদি বড় ঝুকি থেকে রেহাই পাওয়া যায় তাহলে জানতে সমস্যা কি। চলুন জেনে নেয়া যাক টিপস গুলো।
যে পিসি/কম্পিউটারে পেন-ড্রাইভ টি ব্যাবহার করে উইন্ডোজ দিবেন সেটিতে পেন ড্রাইভ সংযোগ দেয়ার আগে জেনে নিন আপনার পিসি/ল্যাপটপ অন হওয়ার সময় বুট-ডিভাইস অপশনে ঢুকতে শর্টকাট-কি কোনটা চাপতে হয়। সব মাদারবোর্ড/মেইনবোর্ড এর শর্টকাট সবসময় একই হয়না। কিছু মাদারবোর্ডে এটা F8 আবার কিছু মাদারবোর্ডে F12। আবার কিছু ক্ষেত্রে F10। এটি জানতে পিসি/ল্যাপটপে পাওয়ার দিয়ে সাথে সাথে স্ক্রিনে লক্ষ করলে দেখবেন মাদারবোর্ড এর লোগোর নিচে কয়েকটি নির্দেশনা দেখায়। এগুলা সাধারণত কিভাবে BIOS সেটিং এ ঢুকবেন, কিভাবে বুট ডিভাইস লিষ্টে ঢুকবেন এসব। ওই স্টার্ট-আপ স্ক্রিনে ভালো করে লক্ষ করলে দেখতে পারবেন কোন ফাংশন বাটন চাপলে আপনি আপনার পিসি/ল্যাপটপে বুট-ডিভাইস লিষ্ট এ যেতে পারবেন।
শর্টকাট কনফার্ম হলে পেন-ড্রাইভ লাগিয়ে বুট-ডিভাইস লিষ্টে গেলে দেখবেন হার্ড ডিস্ক এর পাশাপাশি আপনার পেন ড্রাইভ ২ বার শো করছে, এটা সাধারণত মোটামুটি নতুন ধারার মাদারবোর্ড গুলোতে দেখতে পাবেন। একবার স্বাভাবিক ভাবে পেন ড্রাইভ এর নাম আবার UEFI দিয়ে শুরু হওয়া পেন-ড্রাইভ এর নাম পাবেন। লক্ষ রাখতে হবে যেন UEFI দিয়ে শুরু হওয়া নাম আমরা না সিলেক্ট করি। নরমাল পেন ড্রাইভ এর নাম সম্বলিত ডিভাইস টি সিলেক্ট করে বাকি প্রসেস গুলো ফলো করে উইন্ডোজ ইন্সটল করে নিন।
আরো একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন। BIOS এর বুট মেনু থেকে ফাষ্ট বুট এর সাথে USB কুইক বুট ইনেবল থাকলে অনেকসময় বুট-ডিভাইস মেনু তে না ঢুকলেও আপনার পেন-ড্রাইভ বুটেবিলিটি অটো ডিটেক্ট হয়ে আপনা-আপনি উইন্ডোজ ইন্সটলেশন প্রসেস আরম্ভ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে উইন্ডোজ ইন্সটল ধাপের ড্রাইভ সিলেকশনে গেলে ইশু পাবেন। GTP এবং MBR পার্টিশন এর একটা চক্করে পড়ে গিয়ে আপনার হার্ড ডিস্কে ড্রাইভ সংখ্যা ৩ এর বেশি হলে আপনি কোন ড্রাইভ সিলেক্ট করতে পারবেন না। অনেক সময় অনেকেই ভুল প্রসেসে এই পর্যন্ত এসে কোন সমাধান না পেয়ে হার্ড ডিস্ক ফরমেট করে ফেলে এবং আবার নতুন করে পার্টিশন দিয়ে সমাধান পেতে হয় যেটি না বোঝার কারনে অনর্থক হয়ে যায়। এবং এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হারানোর ঝুকি থাকে।
সুতরাং, উপরের সকল নির্দেশনা সঠিকভাবে জেনে-মেনে পেন-ড্রাইভ বুটেবল করে বুট ডিভাইস ম্যানুয়াল সিলেকশন এর মাধ্যমে উইন্ডোজ ইন্সটল করে উপভোগ করুন একটি ক্লিন উইন্ডোজ এর অভিজ্ঞতা।
যেকোন সমস্যার সম্মুখীন হলে কমেন্টে জানাতে পারেন। পোষ্টটি হেল্প করে থাকলে অন্যদের জানাতে শেয়ার দিতে পারেন।
স্টে সেইফ।
This Post Has 0 Comments