skip to Main Content

সিপিএ মার্কেটিং বৃত্তান্ত, বিভ্রান্তি, এর ভবিষ্যৎ এবং পরামর্শ

cpa marketing post feat img - saiful.com.bd

সিপিএ, যেটি ইংরেজীতে CPA বা Cost Per Action বলে। মানে, নির্দিষ্ট কোন প্রডাক্ট এর লক্ষ অর্জনে ইন্টারনেটে প্রচার কাজ করে যাদের উদ্দেশ্যে মার্কেটিং করা হয় বা যারা টার্গটেড অডিয়েন্স থাকে সেই অডিয়েন্স যখন প্রোডাক্ট এর প্রতি পজিটিভ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে তখন তার বিপরিতে প্রোডাক্ট ওনার একটি ফিক্সড ফিস/অর্থ দেয়। সেটাকে মূলত “কষ্ট পার একশন” বা সিপিএ বলা হয়। আর এই পুরো কাজটিকে সিপিএ মার্কেটিং বলা হচ্ছে। আসুন জেনে নেয়া যাক সিপিএ মার্কেটিং এর বৃত্তান্ত, বিভ্রান্তি, এর ভবিষ্যৎ এবং সবমিলিয়ে কিছু আদর্শ পরামর্শ কি হতে পারে।

সিপিএ মার্কেটিং বৃত্তান্ত

আরো একটু সহজ করি। ধরুন কারো একটি সফটওয়ার বা টুল আছে কম্পিউটারের জন্য। তিনি চাচ্ছেন কেউ যদি তার ওই সফটওয়ার টি মার্কেটিং করে তার টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কম্পিউটারে ইন্সটল করাতে পারে তাহলে সেই সফটওয়্যার এর মালিক যিনি মার্কেটিং করবেন তাকে পার ইন্সটলেশনের জন্য একটি ফিস/চার্জ দিবেন। এভাবে যত বেশি ইন্সটল করাতে পারবে তত বেশি সেই মার্কেটার আয় করতে পারবেন। কিছু সার্ভিসে সাইন-আপ বা রেজিস্ট্রেশন এর কাজেও এমন ফিস দিতে দেখা যায় অনেক সিপিএ প্রভাইডার দের। অনেকে লিড জেনারেশন বলার চেষ্টা করে এই ধারণাটিকে, কিন্তু সেটি আংশিক সত্য হলেও অনেকটাই ভূল। লিড জেনারেশন নিয়ে অন্যদিন একটি পুরো আর্টিকেল লেখার ইচ্ছা আছে।

এই সিপিএ ধারণাটি খুব বেশিদিন হয়নি মার্কেটে তরুন বা নতুনদের আগ্রহ পেয়েছে। যারা এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত, দুঃখজনক হচ্ছে তারা কোন প্রতিষ্টিত বা অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারের পরামর্শে এই পথে আসেন না। আমার মতে এই সিপিএ মার্কেটিং ধারণা নিয়ে পড়ে থাকাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ভবিষ্যৎ একদমই খারাপ/ঝুকিপূর্ণ। এই সিপিএ মার্কেটিং করে যেমন অনেকে আসলেই কিছু অর্থ আয় করছে, তেমনি অনেকেই শেষমেশ টাকা হাতে পাচ্ছেনা এবং পরবর্তীতে ফ্রাস্ট্রেশনে ভুগছে এবং অনলাইনে আয় এর আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। প্রোফেশন হিসেবে নেয়া বা সিপিএ মার্কেটিং দিয়ে অনলাইনে আয় শুরু করা হতে পারে অনলাইনে আয় করার স্বপ্নের মাঝে একটি বড় দুঃস্বপ্ন। সময় মত বুদ্ধি খাটিয়ে এখান থেকে নিরাপদে অন্য স্কিলে বেরিয়ে যেয়েও অথেন্টিকভাবে অনলাইনে আয় করা সম্ভব।

যারা সিপিএ মার্কেটিং এর কাজ করেন তারা আসলে নিজেই জানেন না তারা কি করছেন। তারা কখনো ভাবেন না, যিনি বায়ার তিনি এ থেকে কিভাবে লাভবান হচ্ছেন এবং ব্যাবহারকারী বা যাদের উদ্দেশ্যে মার্কেটিং করা হচ্ছে তারাই আসলে কি পাচ্ছেন ওই প্রোডাক্ট থেকে সেটাও ভেবে দেখা দরকার। পাশাপাশি এটা দীর্ঘমেয়াদী পেশা হিসেবে নেয়া সম্ভব কি না। এসব না ভেবেই ডলার কামানোর সহজ এবং দ্রুত উপায় হিসেবে সিপিএ মার্কেটিং করতে ঝাপিয়ে পড়ছে অসংখ্য তরুন এবং মোটামুটি সবাই একরকম প্রতারিত হচ্ছে।

সিপিএ মার্কেটিং বিভ্রান্তি

আমরা যখন কোন টুল বা কোন কন্টেন্ট এর জন্য গুগলে সার্চ করি, বিশেষ করে কোন সফটওয়্যার বা গান বা কোন একটি ফাইল। অনেক সময় দেখবেন ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করলে নানা ধরনের পপ-আপ আসে ছোট ২-৫ মেগাবাইট এর একটি টুল কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ব্যাবহারকারী ভাবে তার কাংখিত কন্টেন্টটিই ডাউনলোড হচ্ছে বা যা ডাউনলোড হচ্ছে সেটা দিয়ে হয়তো কাঙ্ক্ষিত ফাইল টি ডাউনলোড করতে হবে বা করা যাবে। কিন্তু পরে দেখা গেলো একটি উটকো এক্সটেনশন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ম্যালওয়ার টুল ইন্সটল হয়ে যায়। যেখান থেকে নানা ধরনের সমস্যা শুরু হয়ে যায় কম্পিউটারে। একটি কমন সমস্যা হচ্ছে ইন্টারনেট ব্রাউজার টুলবারে সার্চ সহ নানা অপশন যুক্ত হওয়া। বা হুট হাট টাস্ক বারে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন বা নটিফিকেশন আসা। অনেকসময় এধরনের টুল/এক্সটেনশন আমাদের ব্রাইজার এর হিস্ট্রি এবং নানা তথ্য হাতিয়ে নেয় প্রপার পারমিশন ছাড়া। এগুলো ছাড়াও বড় ধরনের বিপদজনক টুলও পসিতে এভাবে আমাদের ভুলে অনেক সময় আমরা নিজেরাই ইন্সটল করে ফেলি যেগুলো নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এবং পরে সেগুলো ট্রাবলশুট করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এভাবে বড় ধরনের কম্পিউটার ভাইরাস এট্যাকও সংঘটিত হয়ে থাকে। এরকম এক একটি ইন্সটলেশনের বিপরিতে প্রোভাইডার ফিস দিয়ে থাকেন। যেটা সিপিএ মার্কেটাররা আপাতত উপার্জন হিসেবে দেখছেন।

আবার, আপনি যেই প্রয়োজনীয় জিনিসটি গুগলে খুজছিলেন তার সন্ধান করতে গিয়ে কোন একটি লিংকে ঢোকার পর সেখানে আপনাকে সাইন-আপ বা রেজিষ্ট্রেশন করার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়, বা অনেকসময় আপনার এমেইল আড্রেস দিতে হয় এমেইল সাবস্ক্রাইবশন এর জন্য। এরকম এক-একটি রেজিষ্ট্রেশন বা ইমেইল সাইন-আপ এর বিপরিতেও একটি ফিস প্রোভাইডার মার্কেটারকে অনেকসময় দিয়ে থাকেন।

ব্যাক্তিগত তথ্য এবং ইমেইল দিয়ে যখন কেউ এই ধরনের সাইটগুলোতে সাইন-আপ বা ইমেইল সাবস্ক্রাইব করেন, তখন সাইট ওনার বা সিপিএ প্রভাইডার’রা সেই তথ্য ব্যাবহার করে প্রতিদিন নানা অপ্রয়োজনীয় ইমেইল পাঠানো শুরু করেন। লোভনীয় অফার, লটারি জেতা, গুগল ফেইসবুক টুইটার এর মত আপনার দৈনন্দিন ব্যবহৃত নানা ওয়েবসাইট সিকিউরিটি ইশু জানিয়ে সেগুলোর হুবহু ডিজাইন করা পেজে লগিন করতে বলে পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেয়া, এসব কাজেও আপনার ইমেইলটি ব্যাবহার করে থাকে। আর সিপিএ মার্কেটিং যারা করে তারা জেনে হউক আর না জেনে হউক এসবে সরাসরি সহযোগী বললেও ভুল হবেনা।

এর সবই মূলত সিপএ মার্কেটিং হিসেবে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এসব করতে গিয়ে অনেকেই কিন্তু তাদের ভার্চুয়াল ড্যাশবোর্ডে বা একাউন্ট গুলোতে আয়কৃত ডলার শুধুই দেখতে পান, কিন্তু শেষমেশ ব্যাংকে উইথড্রো করতে পারেন না। কেউ কেউ খুবই সামান্য অর্থ পাচ্ছেন হাতে। আরও দুঃখজনক হচ্ছে, যারা এধরনের সিপিএ মার্কেটিং করে, তারা এসবের উপরোক্ত ভয়াবহতা সম্পর্কে নিজেরা বেশিরভাগই জানেন না। এসব না জেনেই তারা তাদের অডিয়েন্সকে ঝুকিতে ফেলছেন। তারা মনে করেন একটা ছোট হলেও এমাউন্ট আয় করতে পারছেন সেটাই বড় ব্যাপার। এটাকে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে চালানোর চেষ্টা করেন। যেটি কিনা সমাজে সত্যিকার ফ্রিল্যান্সিং এবং ফ্রিল্যান্সার দের প্রতি বিরূপ প্রভাবও ফেলে অনেকসময়।

সোজা কথায় বলতে গেলে, যারা সিপিএ মার্কেটিং করছেন, তারা মূলত জগৎজুড়ে সকল ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীদের ইন্টারনেট ব্যাবহারের অভিজ্ঞতাকে প্রতিনিয়ত খারাপ করে চলেছেন, বিষিয়ে চলেছেন। ডিজিটাল এই যুগে ইমেইল একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যাবস্থা। সেখানে প্রতিদিন দেখবেন সবার ইনবক্স ভরে থাকে শুধু অপ্রয়োজনীয় কিছু ইমেইল বার্তা দিয়ে। নানা স্প্যাম ফিল্টার করেও রুখতে এমেইল সেবা দেয়া কোম্পানি গুলো হিমশিম খাচ্ছে রীতিমতো।

এই সুযোগে সিপিএ মার্কেটিং সেখাতে আবার অনেক পাতি ট্রেইনিং সেন্টার দাড়িয়ে গেছে শহরের অলিগলিতে। যারা এটাকে ফ্রিল্যান্সিং ট্রেইনিং/কোর্স বলে প্রচার করছেন। শুধু তাই নয়, তারা গ্যারান্টিও দিচ্ছেন এ থেকে আয় করার। প্রাথমিক ভাবে তারা আয় করতে নিজেরা ইনভেষ্ট করে হলেও আয় এর মুখ দেখিয়ে ছাত্রের কাছে একটি ভিডিও রিভিউ নিয়ে সেটা দিয়েই পরের সেশনের ভর্তি প্রচার চালাচ্ছেন। আমার মতে এই সিপিএ মার্কেটিং যুব সমাজের যারা ফ্রিল্যান্সিং এর স্বপ্ন দেখে ট্রেইনিং করে হউক বা কারো সহযোগীতায়/প্ররোচনায় হউক সিপিএ মার্কেটিং শুরু করছে তারা তাদের ফ্রিল্যান্সিং এর শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়ে নিজের সম্ভাবনা এবং অনলাইনে আয় এর ভবিষ্যৎ দুই’ই নষ্ট করছেন।

সিপিএ মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ

সিপিএ মার্কেটারদেরকে যারা কষ্ট-পার-একশন এর জন্য ফিশ দিচ্ছে বা পে করছে, আই মিন যারা প্রডাক্ট/টুল/সাইন-আপ এর জন্য মার্কেটিং করাচ্ছে তারা কিন্তু আসলেও কিছু খরচ করছে। সবাই সবসময় ধোকা দিচ্ছে তা নয়। কিন্তু তারা যেহেতু টাকা খরচ করছে তাহলে গুগল বা জানাশোনা অনলাইন বিজ্ঞাপন সোর্স/প্রতিষ্টান গুলতে পেইড এড কেন দিচ্ছেননা। কারন, পেইড এড প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল এরকম প্রতারণা বা জঞ্জাল কন্টেন্টের বিজ্ঞাপন এপ্রূভ করে না। রাস্তা একটাই, সিপিএ মার্কেটার ধরা।

যারা জিমেইল এর ইমেইল ব্যাবহার করেন, তারা স্প্যাম ফোল্ডারে ঢুকলেই দেখবেন কিছু এমেইল আনরিড অবস্থায় অটোমেটিক্যালি পড়ে আছে। কারন গুগল এর রোবট আর্টিফিশিয়াল-ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে ইমেইল গুলোর কন্টেন্ট রিড করে সেগুলো বুঝতে পারে যে এগুলো স্প্যাম/প্রতারণামূলক ইমেইল। আবার, প্রথম প্রথম ব্যাবহারকারীদের ইনবক্স পর্যন্ত গেলে এই মেইল গুলো অনেকেই “মার্কড এজ স্প্যাম” বাটনে ক্লিক করতে ইমেইলটি স্প্যাম ফোল্ডারে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে এ ধরনের ইমেইল গুলো স্বয়ংক্রিয় ভাবে স্প্যাম হয়ে যায়। গুগল ব্যাবহারকারীদের স্প্যাম ইউজেস ট্রাক করে ওই একই ধরনের ইমেইল যে কোন ব্যাবহারকারীর ইনবক্সে গেলে সেটা অটোমেটিক স্প্যাম করা শুরু করে দেয়। আর সেই জন্য, স্প্যাম ইমেইল সেন্ডারদের প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কন্টেন/ডিজাইন সম্বলিত স্প্যাম ইমেইল আমরা পেয়ে থাকি। ইমেইল ব্যাবহার করে প্রডাক্ট/টুল/সাইন-আপ মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ এর ব্যাপারে নিশ্চয় আপনার ধারণা হয়ে গেছে।

এবার আসি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ডাউনলোড বাটন বা ব্যাকগ্রাউন্ড অটো ক্লিক এড এবং সেখান থেকে প্রডাক্ট/টুল/সাইন-আপ হিট নিয়ে কথা বলি।

দেখুন, দিন দিন কিন্তু ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীরাও চালাক হচ্ছেন। তারা এসব বাটন দেখলেই কোনটাতে কি থাকতে পারে সে ব্যাপারে প্রায় অনেকেই এখন ধারণা রাখেন এবং এড়িয়ে যান। এবং এগুলো থামাতেও নানা টুল আছে ইন্টারনেটেই/ব্রাউজারেই। যেমন, পপ-আপ ব্লকার, পেজ স্ক্যানার, ইত্যাদি। সুতরাং, এই ধরনের পদ্ধতিও এক সময় একেবারে কোন কাজে দিবেনা।

যে কোন ইনকাম সোর্স এর ব্যাপারে ভবিষ্যৎ জানতে যে কেউ নিজেকে কয়েকটি প্রশ্ন করলেই নিজে নিজে বুঝতে পারবে সেটা তার ভবিশ্যতের জন্য কতখানি ঝুকিমুক্ত এবং কতখানি এথিক্যাল।

  • যাদের জন্য কাজ করবেন/করছেন, ভাবুন আপনার এই কাজ এর বিনিময়ে তারা কিভাবে লাভোবান হবেন। আপনাকে দেয়া পেমেন্ট এর টাকা তারা কিভাবে তুলবেন।
  • যাদেরকে টার্গেট করে মার্কেটিং করছেন তারা আপনার প্রোডাক্ট/টুল থেকে কিভাবে সুবিধা পাবেন, নাকি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
  • এবং ভাবুন, সেই কাজ করে আপনি কতদিন ইনকাম চালু রাখতে পারবেন, সামনে ৫ বছর সেই ইনকাম সোর্স কাজ করবে কিনা সেই ব্যাপারে নিজেকে জিগ্যাস করুন।

প্রশ্ন গুলির উত্তর যদি আপনার কাছে আশাদায়ক হয় তবে সেটা নিয়ে সামনে আগাতে পারেন। আর যদি মনে করেন উত্তর গুলো এথিক্যাল না বা কতদিন এটা করে উপার্জন করতে পারবেন সে ব্যাপারে একেবারে ধারণা পাচ্ছেন না তাহলে সেটা নিয়ে আগে পড়াশোনা করুন। জানার চেষ্টা করুন। এবং এমন কিছু করুন যেটি এথিক্যাল বা কারো জন্যে ক্ষতিকারক না এবং যেটি করে আপনি সামনের অন্তত ৫ বছর নিশ্চিন্তে ইনকাম চালু রাখতে পারবেন। এভাবে ভেবে চিন্তে অনলাইনে আয় এর জন্য কোন একটি স্কিল তৈরি করে কজা শুরু করলে সেটা ভবিষ্যৎ এর জন্য নিরাপদ হবে।

অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ

যারা সিপিএ মার্কেটিং করছেন, তারা জেনে হউক না জেনে হউক অনলাইনে উপার্জন করতে গিয়ে গোটা ইন্টারনেট অভিজ্ঞতাকে সকল ব্যাবহারকারীদের জন্য খারাপ করছেন। যখন একজন সার্চকারীকে কোন সাইটে এনে তার চাওয়া কন্টেন্ট না দিয়ে তাকে অন্যকিছু বা ঝুঁকিপূর্ণ পথে টানছেন, ফলাফলে যাই পান, সেটা অবশ্যই সেই মার্কেটার ভালো করছেন না। এবং স্প্যামি ইমেইল দিয়েও আপনি নানাভাবে ব্যাবহারকারীদের হয়রানী করছেন, তাদের ক্ষতি করছেন বা তাদের ক্ষতি হতে অচেনা কাউকে সহায়তা করছেন। আপনি ঠিক করছেন না।

অথচ, অনুরূপ কাজ গুলই সঠিক পথে ধৈর্যের সাথে করলে সিপিএ ছাড়াই আরো ভালো আয় করতে পারেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে অথেন্টিক ভাবে ইনকাম সচল রাখতে পারেন। যেটাকে প্যাসিভ ইনকাম বলে। মানে দীর্ঘ সময়ের জন্য ইনকাম সোর্স তৈরি করে সেটা থেকে ইনকাম পেতে থাকা। যেমন, ব্লগিং। ব্লগিং করে গুগল এডসেন্স দিয়ে আয় করা। সাইট থেকে লিড/একশন এর বিনিময়ে সিপিএ ইনকাম করতেও আপনাকে ব্লগিং করে সাইট গুগলে র‍্যাঙ্ক করাতে হচ্ছে। কিন্তু গুগল এডসেন্স আপ্রূভাল পেতে আপনার ওয়েব পেজের কনটেন্ট তাদের স্ট্যান্ডার্ড/শর্ত পূরন করতে না পারায় আপনি গুগলের এডসেন্স ব্যাবহার করতে পারছেন না। অরিজিনাল/ইউনিক কন্টেন্ট থাকলে কিছু ডেইলি ভিজিট থাকলে গুগল এডসেন্স পাওয়া সহজ। আপনি সাইটে এমাজন এফিলিয়েট লিংক বসিয়েও প্রোডাক্ট সেল এর একটি নির্দিষ্ট কমিশন(৪%-২০%) বেসিসে ইনকাম করতে পারেন। এমনকি, গুগল এডসেন্স এবং এমাজন এফিলিয়েট একই সাথে রেখে দুই ভাবেই আর করতে পারেন।

আবার, ইমেইলে যারা সিপিএ মেইল বা স্প্যাম ইমেইল করছেন সেটি বন্ধ করে আপনার ওয়েবসাইট থেকে অথেন্টিকভাবে ইমেইল সাবস্ক্রিপশন থেকেও এমেইল সংগ্রহ করে সেখানে ইমেইল করে আপনার সাইটে ভিজিটর বাড়িয়ে সেখান থেকে এডসেন্স বা এমাজন সেল থেকে আয় বাড়াতে পারেন। তাছাড়া, শুধু মাত্র ইমেইল করেও এমাজন এফিলিয়েট ইনকাম করা সম্ভব।

কোন কিছুই সহজ নয়। শুরু না করলে সেটি বুঝতে পারবেন না। তবে লেগে থাকলে এবং মন দিয়ে লক্ষবস্তু ঠিক রেখে কাজ করতে থাকলে সফলতা আসবেই। এমন কিছু করুন যেটি ক্যারিয়ারে অভিজ্ঞতা যোগ করার মত কিছু। কাউকে বলার মত কিছু। যেটির ভবিষ্যৎ আছে।

যারা ইতোমধ্যে সিপিএ মার্কেটিং এর সাথে জড়িত তারা এই পোষ্ট পড়ার সাথে সাথেই সবাই সব কিছু বন্ধ করার পরামর্শ দেবনা। হয়তো সিপিএ ইনকামটুকুই আপনার সম্বল বা আপাতত উৎসাহ হতে পারে। তাই সিপিএ থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে পড়ুন। সময় দেয়া কমিয়ে সেই সময় গুলো সঠিক ভাবে ব্লগিং এবং এডসেন্স থেকে ইনকাম পদ্ধতি শিখতে ব্যয় করুন। কিভাবে এমাজন এফিলিয়েট কাজ করে সেসব নিয়ে বিস্তারিত জানুন। এসব জানতে কারো কাছে যেতে হবেনা। গুগল করলেই অনেক রিসোর্স পাবেন। সেগুলতে সময় দিন। মোটামোটি সবকিছু নিয়ে পরিস্কার ধারণা হয়ে গেলে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে আপনি কতদুর জানলেন সেটা শুরু করার জন্য যথেষ্ট কি না, বা আরো জেনে ফাইনালি শুরু করুন।

অথবা, অন্যে আরো অনেক স্কিল আছে যেগুলোর ভালো ডিম্যান্ড আছে প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেস গুলতে। যেমন, আপওয়ার্কফ্রিল্যান্সারফাইভার, ইত্যাদি। ফাইভার মার্কেটপ্লেসটি আপাতত নতুনদের জন্য অন্যান্য মার্কেট গুলোর তুলনায় সহজ। এইধরনের প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেস গুলোতে চাহিদাপূর্ণ স্কিল গুলোর মধ্যে আছে আছে ওয়েব ডিজাইন/ডেভেলপমেন্টসফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টগ্রাফিক্স ডিনাইজএসইও, ইন্টারনেট মার্কেটিং, ইত্যাদি। আপনি এর যেকোন একটি রপ্ত করেও শুরু করতে পারেন আপনার অনলাইন ইনকামের যাত্রা। এগুলো শিখে কাজ শুরু করতে পারলে আপনি পেতে পারেন একটি দীর্ঘমেেয়াদী সলিড ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার।

অনলাইনে আয়ের জন্য আপনার পথ চলা নিজের জন্য এবং অন্যে সকলের জন্য নিরাপদ হউক।

Comments

This Post Has 0 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Next
Back To Top